Edit Content
Satarkul Branch
Uttara Branch (Junior Campus)
Uttara Branch (Senior Campus)

সময়ের সঙ্গে বদলে যাচ্ছে প্রজন্ম ও শিক্ষার ধরন

আমরা প্রতিনিয়ত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। সময় বদলে যাচ্ছে, নতুন নতুন চিন্তার ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে। আমাদের জীবনযাপনকেও প্রভাবিত করছে সেসব ভাবনা। এ নিয়ে অনেকের আক্ষেপেরও শেষ নেই—যুগ পাল্টে গেছে, আমাদের সময়ে এমনটা ছিল না! আসলে তা-ই, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যেন বদলে যাচ্ছে সব কিছু!

পরিবর্তিত সময় ও বাস্তবতার প্রভাব খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রজন্মের ওপর প্রভাব ফেলে, আর এর ওপর ভিত্তি করেই গড়ে ওঠে তাদের অভিজ্ঞতা, সামাজিক মূল্যবোধ ও আচরণের ধরন।

মানুষের ইতিহাসে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা; বিশ্বের প্রায় সব জায়গাতেই এই যুদ্ধের ব্যাপক প্রভাব লক্ষ করা গেছে। বিশেষ করে, পর পর দুটি বিশ্বযুদ্ধ এবং এর মধ্যবর্তী সময়ের অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব তখনকার বিশ্বের বেশির ভাগ মানুষের ওপর সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে। ফলে বিশ্বযুদ্ধের পর তখনকার প্রজন্মের অভিজ্ঞতা যেন আরো প্রবলভাবে পরিবর্তিত হতে থাকে।

বিশ্বের বয়স্ক জনগোষ্ঠীর বেশির ভাগই এখন ‘বেবি বুমার্স’ (১৯৪৬ থেকে ১৯৬৪ সালের মধ্যে জন্ম) বা ‘জেনারেশন এক্স’-এর (১৯৬৫ থেকে ১৯৮০ সালের মধ্যে জন্ম) মানুষ।

তাঁরা যুদ্ধের কঠিন বাস্তবতা আর মহামন্দার সময় পার করেছেন; আবার যুদ্ধ-পরবর্তী সমৃদ্ধি, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও পরিবর্তিত পারিবারিক মূল্যবোধের ভেতর দিয়ে গেছেন। এর পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং প্রযুক্তির বিকাশ তাঁদের একই সঙ্গে স্বাধীনচেতা ও সন্দেহপ্রবণ মানসিকতা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করেছে। তাঁরাই প্রথম দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহারের অভিজ্ঞতা লাভ করেছেন।

এরপর আশির দশকের শুরু থেকে নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত ‘মিলেনিয়াল’ বা ‘জেনারেশন ওয়াই’ নামে পরিচিত।

তাঁদের সময়ে ইন্টারনেটের উত্থান ঘটে; বিশ্বায়ন ও সারা বিশ্বে দ্রুত প্রযুক্তি ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেন তাঁরা। এই প্রজন্মের মানুষদের একদিকে সামাজিক ন্যায়বিচার নিয়ে ভাবতে হয়, অন্যদিকে তাঁদের জীবন ও কর্মের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে চলতে হয়। এদিকে ডিজিটাল যোগাযোগে অভ্যস্ত মানসিকতা তাঁদের অভিজ্ঞতাকে আকার দিতে সাহায্য করে।

এরপর দেখা মেলে ‘জেনারেশন জি’ বা ‘জেন-জি’ প্রজন্মের (১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালে জন্ম)। স্মার্টফোন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, প্রযুক্তি ও তথ্য ব্যবহারের অবাধ সুযোগের মধ্য দিয়ে বেড়ে ওঠে এই প্রজন্ম। স্মার্টফোন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, প্রযুক্তি ও তথ্য ব্যবহারের অবাধ সুযোগের মধ্য দিয়ে বেড়ে ওঠে এই প্রজন্ম।  ডিজিটাল  মাধ্যমের সাবলীল ব্যবহার তাঁদের ব্যক্তিত্ব গঠনে সহায়ক ভূমিকা রাখে। বলা চলে, এই প্রজন্ম ডিজিটাল জীবনযাত্রার ওপর ব্যাপকমাত্রায় নির্ভরশীল। তাদের নিয়মিত যোগাযোগ বা কারো সঙ্গে দেখা করা থেকে শুরু করে আড্ডা, বিনোদন এমনকি খেলাধুলা পর্যন্ত ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে হচ্ছে।

প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে পরিবর্তিত হওয়া এই অভিজ্ঞতা, প্রযুক্তির রূপান্তর ও সহজলভ্যতার প্রভাব পড়েছে জীবনের সব জায়গায়। কাজের জায়গা, ভাষা, আচরণ, ব্যবহার, যোগাযোগ থেকে শুরু করে সামগ্রিক সংস্কৃতিতে এই প্রভাব লক্ষণীয়। এটা খুবই স্বাভাবিক যে এক প্রজন্মের অনেক অভিজ্ঞতাই পরের প্রজন্ম তাদের মতো করে বুঝে নিতে পারে না। আবার দেখা যাচ্ছে, হাতে থাকা স্মার্টফোনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে পুরনো বন্ধুকে খুঁজে বের করার মতো নতুন প্রজন্মের অনেক অভিজ্ঞতাই পুরনোদের রপ্ত করতে হচ্ছে। প্রযুক্তির বিকাশের এই অভিজ্ঞতা থেকে তাঁরা নিজেদের বঞ্চিত করতে চাইছেন না।

মূলত এই প্রবণতাই এক প্রজন্মের সঙ্গে আরেক প্রজন্মের আচরণগত পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। জেন-জি যে প্রযুক্তিতে অভ্যস্ত বা তাদের কাছে যে আচরণ অত্যন্ত স্বাভাবিক, তা হয়তো বেবি বুমার্স, জেনারেশন এক্স এবং এমনকি মিলেনিয়ালদেরও শুরু থেকে শেখা লাগছে; শিখলেও জেন-জিদের মতো পারদর্শী হতে অনেক বেশি সময় লাগছে। দেখা যাচ্ছে, জেন-জিরা দৈনন্দিন জীবনেও অনেক বেশি প্রযুক্তিনির্ভর। পোশাক বা কোনো কিছু কেনাকাটা করা, দল বেঁধে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়া, এমনকি যেকোনো ধরনের তথ্য বা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার ক্ষেত্রেও তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর নির্ভরশীল। অর্থাৎ, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম বা ইউটিউবের মতো ডিজিটাল মাধ্যম তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও মানসিকতা গঠনের ওপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে।

নিত্যনতুন রূপান্তরিত ও সহজলভ্য প্রযুক্তি জেন-জিদের মাঝে এমন কিছু আচরণ বা বৈশিষ্ট্য তৈরি করেছে, যা এর আগে অন্য কোনো প্রজন্মের মধ্যে দেখা যায়নি। প্রযুক্তির প্রতি তাদের অপরিসীম আগ্রহের কারণে ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুই ধরনের প্রবণতাই লক্ষ করা যাচ্ছে। তারা প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে যেকোনো জায়গা থেকে যেকোনো সময় পছন্দমাফিক তথ্য জেনে নিতে পারে, এটাকে ইতিবাচক প্রভাব বলা যায়। আবার এর ফোদের মনোযোগ ধরে রাখার সময়ের পরিমাণ কমে গেছে। এই প্রজন্মের মানুষের মধ্যে খুব সংক্ষেপে বা দ্রুত সব কিছু শিখে ফেলার প্রতি প্রবল আকর্ষণ রয়েছে।

খুব স্বাভাবিকভাবেই, আমাদের সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থাও প্রজন্মের এই রূপান্তরের প্রভাবের বাইরে পড়েনি। জেন-জি প্রজন্মের শেষের

Published in: Kaler Kantho